আমার নেয়া অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে চাই-
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে আগামি সংসদ নির্বাচনে আবারও আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল।
আজ সোমবার এ বিষয়ে তাঁর (বাদল) লিখিত একটি বক্তব্য থেকে দৃঢ়তার সঙ্গে এ ঘোষণার কথা জানা যায়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ‘বাদল অনুসারী’ হিসেবে পরিচিত সফিকুল ইসলাম শফিকের ফেসবুক পেইজে ফয়জুর রহমান বাদলের ওই লিখিত বক্তব্যটি তুলে ধরা হয়। পরে তাঁর (বাদল) অনুসারী একাধিক নেতা কর্মী ও সমর্থকদের স্ব স্ব ফেসবুকেও আগামি সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদলের প্রার্থীতা ঘোষণার ওই লিখিত বক্তব্যটি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে আজ দুপুরে ফয়জুর রহমান বাদলের সঙ্গে কথা বললে,তিনি এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,এটি আমার লিখিত বক্তব্য।আমি এটি গণমাধ্যমসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের জন্য আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও আমার সমর্থকদেরকে অনুরোধ করি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে পুনরায় আওয়ামীলীগের (নৌকা) মনোনয়ন প্রত্যাশী, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ও বঙ্গবন্ধুর সহচর, বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট মুজিবুর রহমানের পুত্র সাবেক সংসদ সদস্য ফয়জুর রহমান বাদলের (নবীনগরবাসীর উদ্দ্যেশ্যে দেয়া) সেই লিখিত বক্তব্যটি তুলে ধরা হলো।
সুপ্রিয় নবীনগরবাসী, সহকর্মি ও শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দ,
আপনারা সকলেই আমার ছালাম ও শুভেচ্ছা নিবেন। আমি আপনাদের অকৃতিম ভালবাসায় সিক্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ নবীনগরের রাজনৈতিক অঙ্গনে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত আছি। আমার বাবা সার্জেন্ট মরহুম মুজিবুর রহমান, ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলার অন্যতম একজন আসামী ছিলেন। তাই উত্তরাধিকার সূত্রেই আমার রক্ত কনিকায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহমান।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ আমার রাজনীতি ও প্রেরণার একমাত্র উৎস। সুতরাং আমার জীবনে যতই বাঁধা বিপত্তি, প্রতিবন্ধকতা আসুক না কেন, আমি আমার মেধা, যোগ্যতা, কর্তব্যনিষ্ঠা সর্বোপরি সর্বশক্তি দিয়ে, নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাবো। পাশাপাশি দলকে সুশৃংখল ও ঐক্যবদ্ধ রাখতে আমাদের প্রিয়নেত্রী জাতির জনকের কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার যথাযথ নির্দেশনা বাস্তবায়নেও সচেষ্ট থাকবো।
আমি দলের যেকোন স্বার্থে অতীতেও দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম, এখনও আছি এবং আজীবন আওয়ামীলীগের একজন কর্মী হিসেবে দলের জন্য সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করে যাবো ইনশাল্লাহ।
প্রিয় সহকর্মিবৃন্দ,
আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থন, ভালোবাসা ও সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে আজ আমি নবীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে দুই দুইবার অধিষ্ঠ হয়ে গুরুদায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। আপনারাই হচ্ছেন আমার প্রাণশক্তি এবং প্রেরণার উৎস্য। আমিও আমার সর্বোচ্চ মেধা, যোগ্যতা, আন্তরিকতা, মননশীলতা দিয়ে বিগত দিনে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি, আওয়ামীলীগের তৃণমূলের প্রতিটি নেতাকর্মী সমর্থকদেরকে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে আগলে রাখতে।
প্রিয় নবীনগরবাসী,
আমি শ্রদ্ধাভরে আজ মাথা নত করে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আপনাদেরকে (ভোটার) স্মরণ করি এজন্য যে, বিগত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, আপনারা আপনাদের মহা মূল্যবান ভোট প্রদান করে, মহান জাতীয় সংসদে নবীনগরের জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে আমাকে সেখানে যেজন্য পাঠিয়েছিলেন, আমি আমার সেই দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করার চেষ্টা করেছি।
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বিগত দু’হাজার চৌদ্দ থেকে দু’হাজার আঠার সাল পর্যন্ত একজন জাতীয় সংসদ সদস্য হিসাবে ওই পাঁচ বৎসর আমি নবীনগরবাসীর জন্য কতটুকু কাজ ও খেদমত করতে পেরেছি?
আমার বিশ্বাস, সেটির বিচার বিশ্লেষণ ও বিবেচনা আপনারাই করবেন। তবে আমার পাঁচ বছরের আমলে সেই সময়ে আমার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় নবীনগর উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নে প্রায় ১ হাজার ২’শ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের প্রকল্প ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিলো। কিন্তু সময়ের অভাবে সবগুলো কাজ সমাপ্ত করতে পারিনি। কিছু গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যমান কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে।
তাই আমার রেখে যাওয়া নবীনগরবাসীর প্রত্যাশিত সেই সকল অসমাপ্ত যুগান্তকারী কাজগুলো আগামি দিনে সমাপ্ত করার জন্য আমি আবারও আপনাদের ‘সেবক’ হওয়ার জন্য বিনয়ের সঙ্গে ইচ্ছে পোষণ করছি। আর সেইজন্য আগামি সংসদ নির্বাচনে আমি আবারও এই আসন (নবীনগর) থেকে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন চাইবো। সেজন্য আপনাদের সকলের সার্বিক সহযোগিতা ও দোয়া/আশীর্বাদ আমার একান্ত প্রয়োজন।
আমার বিশ্বাস, নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকের পাশাপাশি এখানকার প্রতিটি সাধারণ জনগণ আমাকে স্নেহ করেন ও ভালবাসেন। আপনাদের এই ভালবাসাকে আমার জীবন চলার পথে পাথেয় করে আমি আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ‘নৌকা’ প্রতীকে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধন্য ও আস্থাভাজন কর্মী হিসেবে একজন দক্ষ ‘মাঝি’ হতে চাই।
কারণ, ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সংসদ সদস্য থাকাকালে অবহেলিত নবীনগরের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় আমি আমার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নবীনগরবাসীর জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে গিয়েছি। ইনশাল্লাহ সুযোগ পেলে, আবারও নবীনগরের সামগ্রিক উন্নয়নে আরও কিছু দৃশ্যমান কাজ করতে চাই।
পরিশেষে শুধু এটুকুই বলতে চাই, আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে আবারও এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হতে পারলে, আমার রেখে যাওয়া নবীনগরের সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা ১২’শ কোটি টাকার যুগান্তকারী সেইসব অসমাপ্ত কাজগুলোর সমাপ্ত করাসহ নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে নবীনগর উপজেলাকে সারাদেশে একটি ‘উন্নয়নের রোড মডেল’ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
আর শাসক নয়, মূলত জনগনের ‘সেবক’ হয়ে আজীবন নবীনগরবাসির পা