রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়: বিশ্ব সমবায় আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট।

প্রতিনিধির নাম / ৭৩ বার
আপডেট : শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫

26

সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়: বিশ্ব সমবায় আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট।

সমবায় এমন এক ধারণা যা মানুষের পারস্পরিক সহযোগিতা, আস্থা, ভাগাভাগি ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টনের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ব্যক্তির একক শক্তি যত বড়ই হোক না কেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার তুলনায় তা সর্বদা সীমিত থেকেছে। এই সম্মিলিত চেতনার ভিত্তিতে যে অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো গড়ে ওঠে, তার নামই “সমবায়” বা Cooperative Movement। আজ ২০২৫ সালের ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবসে বাংলাদেশের প্রতিপাদ্য হলো “সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়”—এই মূল চেতনারই পুনর্গঠন। এটি শুধু একটি স্লোগান নয়, বরং জাতির অগ্রযাত্রার এক নৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গীকার। এই নিবন্ধে আমরা সমবায় আন্দোলনের বৈশ্বিক ইতিহাস, এর তাত্ত্বিক দর্শন, এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর বিবর্তন, সাফল্য ও সীমাবদ্ধতা বিশ্লেষণ করব, যাতে বোঝা যায়, কেন সমবায় কেবল অর্থনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং সামাজিক ন্যায় ও গণতান্ত্রিক চেতনার বাস্তব প্রতিফলন।
সমবায় ধারণার শিকড় মানব সভ্যতার সূচনালগ্নেই নিহিত। মানুষ যখন শিকার, কৃষি বা উৎপাদনের কাজে একত্রিত হলো, তখন থেকেই একধরনের সহযোগিতা বা Co-operation চালু ছিল। তবে আধুনিক অর্থে সমবায় আন্দোলনের সূচনা ঘটে উনবিংশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে। ১৮৪৪ সালে ইংল্যান্ডের রচডেল শহরের একদল তাঁত শ্রমিক নিজেদের দারিদ্র্য ও শোষণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে গঠন করে Rochdale Society of Equitable Pioneers, যা আধুনিক সমবায় আন্দোলনের জন্মদাতা হিসেবে স্বীকৃত। এই সংগঠনই প্রথম সাতটি নীতি স্থির করেছিল, যা আজও বিশ্বের সমবায় আন্দোলনের ভিত্তি হিসেবে গৃহীত, সদস্যের স্বেচ্ছা ও উন্মুক্ত অংশগ্রহণ, গণতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ, সদস্যদের অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধীনতা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সহযোগিতার মধ্যে সহযোগিতা এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। এই সাতটি নীতিই আধুনিক সমবায়ের নৈতিক ভিত্তি গঠন করে।

রচডেলের এই মডেল দ্রুতই ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। জার্মানিতে ফ্রেডরিখ রাইফেইসেন ও হারমান শুলৎস-ডেলিটশ নামের দুই ব্যক্তি সমবায় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন যা গ্রামীণ কৃষকদের ঋণদাসত্ব থেকে মুক্তি দেয়। এভাবে ইউরোপে সমবায় আন্দোলন অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে এক সামাজিক বিপ্লবে রূপ নেয়। বিশ শতকের প্রথমার্ধে এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকাতেও। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO) সমবায়ের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে একে টেকসই উন্নয়নের অংশ করে তোলে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক সমবায় সংস্থা (International Co-operative Alliance—ICA) বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে ১০ কোটি সদস্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্ব সমবায় আন্দোলন কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয়, সামাজিক ন্যায় ও টেকসই উন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, সুইডেন, নরওয়ে বা ফিনল্যান্ডে সমবায় কেবল কৃষি উৎপাদনে নয়, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, ভোক্তা সরবরাহ, এমনকি শিক্ষা ও প্রযুক্তি উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নর্ডিক দেশগুলিতে সমবায় প্রতিষ্ঠানের আয় অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বেশি, কারণ সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করে, সমবায় মানে ন্যায্য বণ্টন, অংশীদারিত্ব ও স্বচ্ছতা।

বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলনের শিকড় ঔপনিবেশিক আমলে প্রোথিত হলেও স্বাধীনতার পর এর প্রকৃত সম্ভাবনা প্রকাশ পায়। ব্রিটিশ শাসনের সময় ১৯০৪ সালে প্রথম সমবায় আইন প্রণীত হয়। সে সময় কৃষকরা মহাজন ও জমিদারের ঋণশৃঙ্খলে বন্দী ছিল। এই প্রেক্ষাপটে কৃষি সমবায় বা ঋণ সমবায় ছিল এক মুক্তির পথ। কিন্তু ঔপনিবেশিক আমলে সমবায়কে জনমুক্তির বদলে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখায় এর বিকাশ সীমিত হয়। পাকিস্তান আমলে সমবায়কে কিছুটা সম্প্রসারিত করা হলেও সেটি ছিল প্রায় নামমাত্র। সমবায় ভিত্তিক সমাজ গঠনই বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির পথ। গ্রাম হবে শহর দর্শনের কেন্দ্রে ছিল সমবায়, যেখানে উৎপাদন, বিপণন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন সবকিছুই সম্মিলিতভাবে পরিচালিত হবে। বাংলাদেশ সরকার ১৯৭২ সালে নতুন সমবায় আইন প্রণয়ন করে, এবং ১৯৭৭ সালে গঠিত হয় সমবায় অধিদপ্তর। কৃষি সমবায়, দুধ উৎপাদন সমবায়, মৎস্য সমবায়, ক্ষুদ্রঋণ সমবায়, সব মিলিয়ে আজ দেশে নিবন্ধিত সমবায়ের সংখ্যা ১,৯০,০০০-এরও বেশি। এসব সমবায়ে প্রায় এক কোটি মানুষ সরাসরি জড়িত। এই বিপুল অংশগ্রহণ বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে এক বিশাল ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে দুগ্ধ উৎপাদনে মিল্ক ভিটা, মধু উৎপাদনে মৌচাষী সমবায়, কিংবা কারিগরদের উন্নয়নে শিল্প সমবায়, এসব প্রতিষ্ঠান প্রমাণ করে যে, সমবায় কেবল আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং সামাজিক রূপান্তরের মাধ্যম। “সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়” এই প্রতিপাদ্যের মধ্যে নিহিত আছে সমাজতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক অর্থনীতির এক সুন্দর মিশ্রণ। এখানে “সাম্য” বলতে বোঝানো হয়েছে অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্পদে সবার সমান অধিকার; আর “সমতা” হলো মর্যাদা ও অংশগ্রহণের সমান সুযোগ। সমবায় ব্যবস্থায় কোনো ব্যক্তি এককভাবে লাভের মালিক নয়; লাভ বণ্টিত হয় সদস্যদের অবদানের ভিত্তিতে। তাই এটি এক ধরনের সামাজিক ন্যায়বোধের অর্থনীতি, যেখানে কারো ক্ষতি করে অন্য কেউ লাভবান হয় না। এই ব্যবস্থাই টেকসই উন্নয়নের প্রকৃত রূপরেখা।

বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে সমবায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় কৃষিক্ষেত্রে। কৃষক সমবায়গুলো কৃষি উপকরণ যৌথভাবে ক্রয় করে, উৎপাদিত ফসল ন্যায্য দামে বিক্রির সুযোগ তৈরি করে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা কমে, কৃষকের আয় বাড়ে, এবং গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হয়। একইভাবে মৎস্য সমবায়গুলো জলাশয় ব্যবস্থাপনা, মাছের প্রজনন ও বিপণনে সমন্বিত কাজ করে। নারী সমবায়গুলোও আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তি। নারী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বা গ্রামীণ নারী সমবায়গুলো স্থানীয় উৎপাদন, হস্তশিল্প ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা গড়ে তুলছে। তবে সমবায় আন্দোলনের সামনে নানা সীমাবদ্ধতাও রয়ে গেছে। প্রথমত, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক প্রভাব অনেক সময় সমবায়ের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে। দ্বিতীয়ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, হিসাব ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং সদস্যদের মধ্যে নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রায়ই সমবায়কে দুর্বল করে ফেলে। অনেক ক্ষেত্রেই সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকৃত সদস্যদের পরিবর্তে প্রভাবশালী কয়েকজনের দখলে চলে যায়, ফলে এর গণতান্ত্রিক চেতনা হারিয়ে যায়। এই বাস্তবতায় প্রতিপাদ্য “সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়” শুধু একটি আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং একটি নৈতিক অঙ্গীকার—যার বাস্তবায়ন চাই নীতিনিষ্ঠ প্রশাসন, শিক্ষিত সদস্য এবং সমাজের সজাগ অংশগ্রহণ।

বিশ্ব সমবায় আন্দোলনের ইতিহাসে দেখা যায় যে, উন্নত দেশগুলো সমবায়কে সরকারি প্রকল্প নয়, বরং নাগরিক উদ্যোগ হিসেবে বিকাশ করেছে। যেমন জাপানের কৃষি সমবায়গুলো (JA Group) সম্পূর্ণভাবে কৃষকদের মালিকানাধীন এবং সেগুলো কৃষি উৎপাদন, বিপণন, এমনকি আর্থিক সেবা পর্যন্ত পরিচালনা করে। কানাডায় Desjardins Group নামের সমবায় ব্যাংক আজ দেশের অন্যতম বৃহত্তম আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সুইডেনে ভোক্তা সমবায় বা KF Group খুচরা বাণিজ্যের ২০ শতাংশেরও বেশি দখল করে আছে। এই দেশগুলোতে সরকারের ভূমিকা মূলত সহায়ক, কিন্তু নিয়ন্ত্রক নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সমবায় আন্দোলনের টেকসই অগ্রগতি চাইলে এমনই এক স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রয়োজন। সমবায় আন্দোলনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। রচডেল পায়োনিয়াররা বলেছিলেন “Education is the soul of co-operation.” বাংলাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সদস্যরা সমবায় ব্যবস্থাপনা, আর্থিক পরিকল্পনা, বা আইনগত কাঠামো সম্পর্কে অবগত নয়। এর ফলে দুর্নীতি ও অদক্ষতা বাড়ে। তাই সমবায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করতে হবে। গ্রামীণ পর্যায়ে সমবায় বিষয়ক শিক্ষা চালু করা, স্কুল ও কলেজে সমবায় ক্লাব গঠন, এবং নারী সদস্যদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যেই তথ্যভিত্তিক অনলাইন সমবায় ধারণা চালু করেছে। এতে সমবায় নিবন্ধন, আর্থিক প্রতিবেদন ও সদস্য ব্যবস্থাপনা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আনা হচ্ছে। এটি স্বচ্ছতা বাড়াবে, অনিয়ম কমাবে, এবং সদস্যদের অংশগ্রহণ সহজ করবে। কিন্তু ডিজিটাল রূপান্তরের সফলতা নির্ভর করছে সদস্যদের ডিজিটাল সাক্ষরতার উপর। তাই প্রযুক্তি প্রশিক্ষণও সমবায় আন্দোলনের অপরিহার্য অংশ হতে হবে। জাতীয় সমবায় দিবসের উদ্দেশ্য কেবল অতীত স্মরণ নয়, বরং ভবিষ্যতের অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণ। এতে আয় বৈষম্য কমবে, শহর-কেন্দ্রিক উন্নয়নের বদলে বিকেন্দ্রীভূত উন্নয়ন হবে, এবং সমাজে ন্যায় ও মর্যাদার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। সমবায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, বেকারত্ব হ্রাস, দারিদ্র্য দূরীকরণ, এবং পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন সম্ভব।

জাতিসংঘ ২০১২ সালকে “আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ” ঘোষণা করেছিল এই উপলব্ধি থেকে যে, সমবায়ই টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শক্তি। কারণ এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে মানুষের কল্যাণের সঙ্গে যুক্ত করে। বাংলাদেশের জন্যও এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এখানে সমবায় আন্দোলন গ্রামীণ উন্নয়ন, সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা ও নারী ক্ষমতায়নের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার যে জাতীয় রূপরেখা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে সমবায় ভিত্তিক ক্ষুদ্র উদ্যোগ ও গ্রামীণ উদ্যোক্তা উন্নয়ন একটি প্রধান কৌশল। তবে সমবায় আন্দোলনের স্থায়িত্ব নির্ভর করছে বিশ্বাসের উপর। সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা না থাকলে কোনো সমবায় টিকতে পারে না। তাই প্রত্যেক সদস্যকে বুঝতে হবে—সমবায় মানে শুধু লাভের প্রতিষ্ঠান নয়, এটি সমাজ গঠনের একটি দায়িত্ব। সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ, নিয়মিত সভা, হিসাবের স্বচ্ছতা, এবং নৈতিকতা চর্চা—এই উপাদানগুলো সমবায়ের প্রাণ। একবিংশ শতাব্দীর বিশ্ব অর্থনীতি ক্রমে বৈষম্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ধনী আরও ধনী, গরিব আরও গরিব হচ্ছে। এই বাস্তবতায় সমবায় হলো এক বিকল্প অর্থনৈতিক দর্শন, যেখানে লাভের চেয়ে মানবিকতা, প্রতিযোগিতার চেয়ে সহযোগিতা, একক মালিকানার চেয়ে যৌথ মালিকানা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই দর্শনই পারে “সাম্য ও সমতা”র সমাজ গঠন করতে, যা আজকের বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।

আজ ৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয় একটি দেশের প্রকৃত উন্নয়ন শুধু জিডিপির বৃদ্ধি নয়, বরং মানুষের অংশগ্রহণ ও মর্যাদার বৃদ্ধি। “সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়” এই প্রতিপাদ্য আমাদের শেখায়—উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি একতা, সহযোগিতা ও ন্যায্যতা। যদি প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি পরিবারে, প্রতিটি খাতে সমবায়ের চেতনা ছড়িয়ে পড়ে, তবে অর্থনৈতিক মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক ন্যায়ও প্রতিষ্ঠিত হবে। অতএব, সমবায় কেবল একটি সংগঠন নয়; এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, একটি অর্থনৈতিক দর্শন, একটি মানবিক চেতনা। এই চেতনাই আমাদের শেখায়, একলা বাঁচা নয়, একসঙ্গে বাঁচা; একলা এগোনো নয়, সম্মিলিত অগ্রগতি। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক যদি এই চেতনাকে অন্তরে ধারণ করে, তবে সত্যিই “সাম্য ও সমতায় দেশ গড়বে সমবায়।” এ প্রতিপাদ্য শুধু একটি দিবসের স্লোগান নয়, বরং হবে বাংলাদেশের নতুন উন্নয়ন দর্শনের জীবন্ত বাস্তবতা।

লেখক-মোঃ মোশাররফ হোসাইন উপজেলা নির্বাহী অফিসার

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ