প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে ইজাজ হত্যার আসামি ফারাবী গ্রেফতার
মোঃখলিলুর রহমান খলিলঃব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী প্রার্থীর মিছিলে প্রকাশ্য দিবালোকে ছাত্রলীগ কর্মী ইজাজকে গুলি করে ফারাবী।এই ন্যাক্কার জনক ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নিন্দার ঝড় উঠে সারা দেশ জুড়ে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আলোচিত কলেজছাত্র আশরাফুর রহমান ইজাজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা হাসান আল ফারাবী জয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, (গত ৫ জুন) বুধবার অনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টা ১৫ মিনিটের দিকে সদর থানাধীন কলেজপাড়া এলাকায় ২০/২৫ জনের সামনে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুর রহমান ইজাজকে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি করে ফারাবি। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা ইজাজকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যায়।
এ সংক্রান্তে নিহত আশরাফুররহমান ইজাজের বাবা বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় এজাহারনামীয় ১৬ জন ও অজ্ঞাতনামা ১০/১৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর একটি টিমের সহযোগিতায় সদর থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি দল ধারাবাহিক ভাবে আসামি গ্রেফতারের অভিযান পরিচালনা করেন।
অবশেষে গতকাল ভোরে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া থানাধীন কুতুবপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে আলোচ্য হত্যাকান্ডের অন্যতম প্রধান আসামি হাসান আল ফারাবি জয়কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর হত্যাকান্ডের ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারের জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, নরসিংদী, আশুগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবশেষে গতকাল রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানাধীন ভাটপাড়া এলাকায় একটি ব্রিজের পাশে ঝোপের মধ্যে থেকে হাসান আল ফারাবি জয়ের দেখানো মতে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি হাসান আল ফারাবি জয় প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে এ হত্যাকান্ডে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী পুর্ব বিরোধের জের ধরে এবং এলাকায় তাদের একক আদিপত্য বজায় রাখার জন্য পুর্ব পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগকর্মী আশরাফুর রহমান ইজাজকে হত্যার উদ্যেশ্য করে তার মাথায় গুলি করে।
পুলিশের কাছে দেওয়া হাসান আল ফারাবি জয়ের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালাল উদ্দীন খোকা ও হাসান আল ফারাবি জয় খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আলোচ্য মামলার ভিকটিম আশরাফুর রহমান ইজাজ ও তাদের সাথে চলাফেরা করত, তারা একই পাড়ার বাসিন্দা। কলেজ পাড়া এলাকায় এককভাবে প্রভাব বিস্তার করত খোকা ও জয়। তবে তাদের সব সিদ্ধান্ত না মেনে নিহত ইজাজ ও তার সাথের কয়েকজন বিরোধীতা করতো। আর একারণেই ইজাজ ও তার কয়েকজন বন্ধুর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল খোকা ও জয় এবং এ বিরোধ আস্তে আস্তে চরম পর্যায়ে ধারণ করে।
জালাল উদ্দীন খোকা, হাসান আল ফারাবি জয় ও আরো কয়েকজন একক আদিপত্য বজায় রাখার জন্য ইজাজ ও তার সাথের বন্ধুদের চরম শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শহরের আরেকজনের কাছ থেকে খোকা অস্ত্রটি সংগ্রহ করে জয়কে দেও এবং ইজাজকে মারার সুযোগ খুঁজতে থাকে। গত ৫ তারিখ সন্ধ্যা ৬ টা ১৫ ঘটিকার সময় নির্বাচন শেষে কলেজপাড়া এলাকায় বিজয়োল্লাস করার জন্য ২০/২৫ জন জরো হয় এবং সেখানে খোকা, জয় ও ইজাজ ও ছিলো। খোকার সাথে কোন এক বিষয় নিয়ে ইজাজের তর্ক বিতর্কের মাঝেই জয় তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে প্রকাশ্যে সাবার সামনেই ইজাজের মাথায় পর পর ২ টি গুলি করে পালিয়ে যায়।
পুলিশ আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামি হাসান আল ফারাবিকে নিবিরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্ত অন্যন্য আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।মামলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার এসআই (নিরস্ত্র) আবু বকর সিদ্দিক কতৃক তদন্তধীন।