শিরোনাম :
বোদায় বর্ণমালা বিদ্যাপীঠ বিদ্যালয় এর নতুন ক্যাম্পাস শুভ উদ্বোধন। কোম্পানীগঞ্জে খালপাড় আদর্শ সমাজ ও যুব সংঘের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নবীনগর নিউ মডেল প্রেস ক্লাবের সদস্য বরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত নবীনগর ভাঙ্গরা বাজারের অসহায় ব্যবসায়ীদের বিশ্বস্থ বন্ধু যুবদল নেতা হাজী কাউছার নবীনগরের বাশারুখে জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা ও ইফতার মাহফিল সম্পন্ন। কোম্পানীগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত প্রকাশ হলো আইপিএলের সময়সূচি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে যুবককে গণপিটুনি ফিলিস্তিনে হামলার প্রতিবাদে তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ পাকুন্দিয়া উপজেলায় জাতীয়তাবাদী জনতা দলের উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন

সোনার তরী: বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের জটিল উপাখ্যানের সরল উপস্থাপন -মো: মোশারফ হোসাইন

প্রতিনিধির নাম / ১১৬৫ বার
আপডেট : শনিবার, ১০ জুন, ২০২৩

 

  1. বিশ্বকবি রবীন্দ্রনা ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) বাঙালির চেতনা ও মননের প্রধান প্রতিনিধি। বাংলা সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তিনি স্বাতন্ত্রচিহ্নিত নির্দেশকের ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংগীতস্রষ্টা। চিত্রকর, সমাজচিন্তাবিদ এবং মানবতাবাদী দার্শনিক হিসেবেও রয়েছে তার বিশ্বখ্যাতি। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবোধের অন্যতম রূপকারও। সোনার তরী কবিতাটি কবির অমর সৃষ্টি। সোনার তরী’ কবিতাটি তাঁর ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত’। এ কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাও এটি। শতাধিক বছর ধরে কবিতাটি বিপুল আলোচনা ও নানামুখী ব্যাখ্যায় নতুন নতুন তাৎপর্যে অভিষিক্ত হয়েছে। একই সঙ্গে, কবিতাটি গূঢ় রহস্য ও শ্রেষ্ঠত্বেরও স্মারক। মহৎ সাহিত্যের গুন হলো কালে কালে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও বিবেচনার আলোকে তার শ্রেষ্ঠত্ব নিরূপিত হতে থাকে।

সোনার তরী কবিতায় রূপকের স্তরবিন্যাসে বর্ষাকালীন প্রতিকূল পরিবেশে ধান কাটতে যাওয়া এক কৃষকের অসহায়ত্ব ফুটে উঠেছে। চারপাশে প্রবল স্রোতের বিস্তার, এমনই একখানি ছোটো খেতের মাঝখানে সোনার ধান নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এক বিপন্ন কৃষক। আকাশের ঘন মেঘ আর ভারী বর্ষণে পাশের খরস্রোতা নদী হয়ে উঠেছে আরও হিংস্র’ ও ক্ষিপ্ত। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিঃসঙ্গ কৃষকের মনে দানা বাঁধতে থাকে অজানা আশঙ্কা । এমন সময় সেখানে ভরা পালে সোনার তরী বেয়ে আসে এক রহস্যময় নেয়ে। কৃষকের তাকে চেনা মনে হয়। উৎকণ্ঠিত কৃষক তাঁর উৎপাদিত সোনার ধানের সবটুকু তুলে দেন নৌকায়। অবাক হয়ে তিনি দেখেন নৌকায় ফসল ধরলেও তাঁর জন্য সেখানে বিন্দুমাত্র জায়গা নেই। পরিশেষে সোনার ধান নিয়ে তরী চলে যায় অজানা দেশে। শূন্য নদীতীরে অপূর্ণতার বেদনা নিয়ে কৃষক দাঁড়িয়ে থাকেন একা। এমন চিত্রকল্পের আড়ালে এখানে অন্তর্লীন রয়েছে একটি জীবনদর্শন। আর তা হলো— মহাকালের স্রোতে অনিবার্যভাবেই মানুষ একসময় হারিয়ে যায়, যদিও তার কীর্তির মৃত্যু হয় না।

সর্বোপরি, জগতে এক শ্রেণির মানুষ কাজ করে কালের গর্ভে হারিয়ে যায়, কর্ম মানুষটিকে বাঁচিয়ে রাখে যুগের পর যুগ। অপরদিকে আরেকটা শ্রেণি আছে যারা কাজ কর্মের ধার ধারে না, তারাও কালের ইতিহাসে টিকে থাকতে চায়, কিন্তু তাদের এই চাওয়া কখনো টেকসই হয় না। অন্যভাবে বললে, জগতের বিখ্যাত ও কুখ্যাত দুই শ্রেণীর মানুষকেই ইতিহাস তার পাতায় লিখে রাখে। মানুষ সুযোগ পেলে স্মরণ করে এদের উভয়েই, তবে বিখ্যাত কে স্মরণ করে শ্রদ্ধাভরে আর কুখ্যাত কে স্মরণ কে ঘৃণা ভরে বকা দিয়ে। পৃথিবীর দশহাজার বছরের সভ্য ইতিহাস বলে, Nature Justice কাউকে ক্ষমা করেনি এবং করবে না। কিছু মানুষ মারা গিয়ে বেছে থাকে আজীবন আর কিছু মানুষ নিক্ষিপ্ত হয় আঁস্তাকুড়ে। কে কোনটা হবে, এটা ব্যক্তির একক সিদ্ধান্ত। সৃষ্টিকর্তা সেরা জীব মানুষকে এই পছন্দের সুযোগ দিয়েছে।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ