প্রেম করে বিয়ে করে লাশ হয়ে ফিরতে হলো বাবার বাড়ি
মোঃখলিলুর রহমান খলিলঃ নবীনগর, ব্রাহ্মনবাড়িয়া প্রতিনিধি: ২৭/০২/২৫ রোজবৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৩০ মিনিটের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শ্রীরামপুর গ্রামের মনি চৌধুরী(২২) নামে এক সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। মৃত মনি চৌধুরী একই গ্রামের মহাব্বত চৌধুরীর মেয়ে ও মনি চৌধুরীর স্বামীর নাম মেহেদী (২৪)। মো. মেহেদীর বাবার নাম ফারুক মিয়া। ফারুক মিয়ার বাড়ী শ্রীরামপুর উত্তর পশ্চিম পাড়া।
প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে জানতে পারে
,উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মহাব্বত চৌধুরীর মেয়ে মনি চৌধুরীর চার বছর আগে একই গ্রামের মো. ফারুকের ছেলে মেহেদীর সঙ্গে অষ্টম শ্রেনিতে পড়ালেখা অবস্থায় প্রেম করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে দুই পরিবারের মধ্যে কোন মিল মহব্বত হয়নি।মনি চৌধুরী শুধু মাঝে মাঝে বাবার বাড়ি যেতেন তার স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে বাবার বাড়ির লোকজনের কোন যোগাযোগ ছিল না। তাদের মুসকান (৩) একটি কন্যা সন্তান আছে। নিহতের বাবা মো. মহাব্বত চৌধুরী জানান, ‘বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে আমার বড় জামাই মাঝিকাড়া নিবাসী ইউসুফ ফোন করে জানায় মনি হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে,আমি খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ নবীনগর সরকারি হসপিটালে যায়।
পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে মনিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, মনিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। মহাব্বত চৌধুরী বলেন তার মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা কিভাবে হয়েছে শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে প্রশ্ন করলে তারা বলেন স্ট্রোক করেছে কিন্তু কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন তার মৃত্যু অন্যকোন কারনে হতে পারে তার গায়ে অনেক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ডাক্তারের এই কথা শোনামাত্র মনির স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান।মনির শাশুড়ীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন নবীনগর থানা পুলিশ এ অভিযোগ করেছেন মহব্বত আলী।
মৃত মনি চৌধুরীর বাবা মহাব্বত চৌধুরী বলেন আমি বাদী হয়ে নবীনগর থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ অপমৃত্যুর অভিযোগ লিখে আমাকে না পড়িয়ে আমার স্বাক্ষর রাখেন,আমি তখন মেয়ের শোকে পড়তে পাড়ি নাই।আমি মেয়ে হত্যার জন্য হত্যা মামলা করবো, প্রয়োজনে আদালতে যাব।উল্লেখ্য মৃত মনি চৌধুরীর গলায় দাগ আছে।তবে মৃত মনি চৌধুরীর স্বামীর বাড়ী গিয়ে তালাবদ্ধ পাওয়া যায় প্রতিবেশীর নিকট জানতে চাইলে তারা বলেন আমাদেরকে রাত ১১টার দিকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে এসে বলে মনি স্ট্রোক করেছে আমরা অনেক পানি ও তেল মালিশ করার পরও দেখি শরীর ঠান্ডা। তখন আমরা বলি নবীনগর হসপিটালে নিয়ে যান ।
নবীনগর সরকারি হসপিটালের তখনকার সময়ের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সাদ্দাম হোসেন বলেন আমি আমার সহকারীর মাধ্যমে খবর পেয়ে আমার কক্ষ থেকে গিয়ে দেখি রোগি অনেক আগেই মৃত্যু বরন করেছেন তারপরেও আমি যাবতীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হয় রোগী মনি চৌধুরী আগেই মৃত্যু বরন করেছেন এবং আমি রোগির গলায় ফাসির বা ফাঁসের চিহ্ন দেখতে পায়, আমি তখন মনি চৌধুরীর শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে বলি আপনারা বলছেন স্ট্রোক করেছেন অথচ আমি দেখছি ফাসের দাগ এই কথা বলার সাথে সাথে সকল আত্মীয় স্বজন লাশ রেখে পালিয়ে যায় আমরা নবীনগর থানা পুলিশকে অবগত করলে লাশ নবীনগর থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মনির বাবা মহব্বত আলী বলেন আমার মেয়ের দাফন সম্পূর্ণ হয়েছে আমার একমাত্র নাতনি মুসকানকে নিয়ে খুনিরা পালিয়েছে, আমার ভয় হচ্ছে আমার নাতনিকেও যদি ওরা মেরে ফেলে আমি আমার নাতনিকে ফেরত ও সন্ধান চাই, পলাতক খুনিদের বিচার চাই।