নরসিংদীর চরাঞ্চল আলোকবালীতে আইন শৃংখলা নিয়ে মতবিনিময়
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নরসিংদীর চরাঞ্চলের আলোকবালীতে দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে তিনজন নিহতের পর আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে মতবিনিময় সভা করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে আলোকবালী ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে এ সমাবেশ করা হয়।
এসময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ এলাকার উন্নয়ন কার্যক্রম ও সার্বিক বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়।
এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীরা সস্প্রতি তিন খুনসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়ে বিভিন্ন মতামত দেন।
সভায় আলোকবালী ইউনিয়নে সকল অবৈধ অস্ত্র ও মাদক দ্রব্য উদ্ধার, সন্ত্রাসী-খুনীদের গ্রেপ্তার, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান, এলাকায় অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান উন্নয়ন, জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে নদীতে ব্রীজ নির্মাণ, নৌ-পথে চলাচলের জন্য নৌকাতে পরিচয়পত্র, স্পিডবোট চলাচলের জন্য লাইসেন্স প্রদানসহ কতিপয় প্রস্তাব বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
এছাড়া ইদানিং আলোকবালীতে তিনটি মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের জন্য গভীর দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এধরণের হত্যাকান্ড আর কখনো যেন না ঘটে সে জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
সভায় আলোকবালী ইউনিয়নের উন্নয়নের জন্য ৭৬ লক্ষ ৩২ হাজার টাকার তিনটি প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে নরসিংদী সদরের সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো: মেনহাজুল আলম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা জাহান সরকার, নরসিংদী জজ কোর্টের পিপি এডভোকেট আব্দুল বাছেদ ভূইয়া, জেলা জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক এডভোকেট আমিরুল ইসলাম আমির, সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ এমদাদুল হক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও পুলিশ, র্যাব,
সেনাবাহিনী, আনসার বাহিনী ও জেলা প্রসাশনের কর্মকর্তাসহ এলাকাবাসী সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এই আলোকবালীতে সম্প্রতি তিনটি হত্যাকান্ডের সাথে যারাই জড়িত, তারা যেই হোক, যে কোন দলের হোক, তাদেরকে খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সাবেক এমপি খায়রুল কবির খোকন।
নরসিংদীর পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলম বলেন, সন্ত্রাসী অস্ত্রবাজদের ঠাই আলোকবালী তথা নরসিংদীতে হবে না। এই সন্ত্রাসী হত্যাকারীরা যাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়েই থাকুক না কেন তাদেরকে খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন বলেন, এলাকায় শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে আলোকবালী ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়র্ডে আইন শৃংখলা কমিটি গঠন করা হবে। এখন থেকে আলোকবালী ইউনিয়নের প্রতি জেলা প্রশাসনের আলাদা নজর থাকবে। এখন থেকে আলোকবালীতে যেন আর কোনো লাশ না পড়ে, তার জন্য তিনি সকলের প্রতি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, এরপর যদি কোনো হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে তাহলে জেলা প্রশাসন তাদের প্রতি কঠোর হবে।