নবীনগর পৌরসভায় কোটি টাকার রাস্তার সুফল পাচ্ছে না জনগণ!
মোঃখলিলুর রহমান খলিলঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসভার অর্থায়নে নবীনগর সরকারি হাসপাতাল থেকে নবীনগর বালুর চর হয়ে ডাঃ আমজাদ হোসেন সিটি পর্যন্ত ১ কোটি চার লক্ষ টাকা ব্যয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন রাস্তার নির্মাণ কাজ ৭০ শতাংশ হলেও জনগণ পুরোপুরি সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না।১১ ফুট প্রস্থ ড্রেইন সহ চৌদ্দ ফুটা প্রস্থ রাস্তা দিয়ে চার চাকার গাড়িতো পরের কথা রিক্সাও ভালো করে চলাচল করতে পারে না।এলাকা বাসীর অভিযোগ পৌরসভার যাবতীয় ট্যাক্স প্রদান করলেও এই রাস্তার সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। হাসপাতালে যাওয়ার রোগীকে কাঁধে করে নিয়ে যেতে হয়, বাজার থেকে চাল ডালের বস্তা মাথায় করে নিয়ে আসতে হয়।এই রাস্তায় যেন তাদের গলার কাঁটা। নবীনগর সরকারি হসপিটাল থেকে রাস্তার সংযোগ মুখটি বন্ধ রয়েছে আবার উপজেলা পরিষদ থেকে এই রাস্তার বিকল্প সংযোগ সড়কও করা হয়নি এজন্যই রাস্তাটি জনগণের কল্যাণে কাজে আসছে না।
এই রাস্তাটি নবীনগর পৌর শহরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করতে পারতো অথচ এই রাস্তাটি দিয়ে ভঙ্গুর অবস্থায় গাড়ি চলাচল করলেও ১ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণের পর রাস্তার সম্মুখের অংশ নবীনগর সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা গেইট এর মাত্র ১৭০মিটার রাস্তার কাজ শেষ না হওয়ার কারনে এখন রিক্সাও চলে না।তাছাড়া সরকারি হাসপাতাল তাদের জায়গা দাবি করে বাঁশের ভেড়া দিয়ে রাস্তাটিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। রাস্তাটির পশ্চিম অংশে ওয়ালীশাহ মাজার থেকে উত্তরে তাজু মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত ১৪১ মিটার রাস্তাটির কাজ শেষ হলে দূরুত্ব কমার পাশাপাশি নবীনগর শহরের কোট রোড,সালাম রোড না হয়ে হাসপাতাল দিয়ে বের হয়ে শহরে প্রবেশ করলে যানজটও সৃষ্টি হবে না।এই রাস্তাটি দিয়ে কলেজ পাড়া,চারগ্রামের, নবীনগর পশ্চিম পাড়া, সাতগাও, আলমনগরের ছেলে মেয়েরা নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিঃ, নবীনগর সরকারি কলেজ,নবীনগর মহিলা কলেজ, নবীনগর ইচ্ছাময়ী বালিকা বিদ্যালয়, নবীনগর পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিঃ ও পৌর দাখিল মহিলা মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করলে তাদের রাস্তার দূরত্ব হ্রাস পাবে,সময় বাচবে ও নবীনগর পৌর শহরের বাজারের রাস্তায় চাপ কমবে।অথচ এতো সম্ভাবনাময় ১কোটি টাকার রাস্তাটি এককথায় গাড়ী চলাচল করছে না। নবীনগর সরকারি হাসপাতাল টু নবীনগর পশ্চিম পাড়া আমজাদ সিটি পর্যন্ত ৮৩৩ মিটার রাস্তাটি ইউনি ব্লক দিয়ে ১ কোটি চার লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করতে গিয়ে ঠিকাদার ৫৯০ মিটার কাজ সম্পন্ন করার পর পশ্চিম পাড়া জালাল মিয়ার পুকুরের জটিলতার কারণে বাকি২৪৩ মিটার রাস্তা করতে পারে নাই।রাস্তার ঠিকাদার ৭০ শতাংশ কাজের বিলের জন্য পৌরসভায় আবেদন করেছেন বাকি কাজ সীমানা জটিলতায় করতে পারছেন বলে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
অথচ এই বাকি ২৪৩ মিটার অংশের কাজ সম্পন্ন হলে ও সরকারি হাসপাতালের সম্মুখ ভাগের অংশের কাজ শেষ করতে পারলে নবীনগর পৌরশহরের বিকল্প একটি চমৎকার রাস্তা হতো নবীনগর পৌরবাসীর জন্য।নবীনগর পশ্চিম পাড়া পৌরসভার পানির পাম্প থেকে আমজাদ ডাঃ সিটির দক্ষিণ দিক হয়ে এই রাস্তা দিয়ে কলেজপাড়া দিয়ে মাঝিকাড়ার ব্রীজে গিয়ে দক্ষিণ দিকে যাওয়ার চমৎকার একটি যোগাযোগ ব্যবস্থা হতো।
এই বিষয়ে ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিক্ষক শেখ হাবিবুর রহমান বলেন আমরা দাবি করছি দ্রুত কোটি টাকার রাস্তার বাকি অংশের কাজ যেন করে জনগণের জন্য খোলে দেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি। স্কুল গামী শিক্ষার্থীরা খুব দ্রুত রাস্তার বাকি অংশের কাজ করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবীনগর পৌরসভার উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মকবুল হোসেন বলেন, “নবীনগর উপজেলা পরিষদ গেইট থেকে নবীনগর পল্লী ভবন পর্যন্ত ১৭০ মিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি সাতলাখ সাতাইশ হাজার টাকা ব্যয়ে ও নবীনগর পশ্চিম পাড়া ওয়ালী শাহ মাজার থেকে তাজু মিয়ার বাড়ী পর্যন্ত ১৪১ মিটার দৈর্ঘ্যের রাস্তাটি নয় লাখ তিন হাজার টাকা ব্যয়ে ইতিমধ্যে নির্মাণাধীন, এই দুটি রাস্তার কাজ শেষ হলে আশা করি কোটি টাকা ব্যয়ের রাস্তার কিছুটা সুফল জনগণ পাবেন।আর আমরা কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তার বাকি ২৪৩ মিটার অংশের কাজ সম্পন্ন করতে পুকুরের সীমানা জটিলতা নিরসনে এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসার আহবান করছি।”
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক রাজিব চৌধুরী বলেন আমরা খুব শ্রীঘ্রই নবীনগর সরকারি হাসপাতালের সম্মুখ অংশের রাস্তাটি খোলে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
উল্লেখ্য ১৯৯৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সংসদ সদস্য নবীনগর পৌর সভা প্রতিষ্ঠা করেন ২০০৯ সালের ২৪ শে ডিসেম্বর খ শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নতি হয়। ক শ্রেণির পৌরসভা হলেও সেবার মানে ক শ্রেণির পৌরসভা হয়ে ওঠেনি।ক শ্রেণির পৌরসভায় ৭২জন জনবল থাকার নিয়ম থাকলেও আছে মাত্র চারজন।আটজন প্রকৌশলী থাকার নিয়ম থাকলেও আছে চারজন।নকশাবিদ , সার্ভেয়ার, চেইনম্যান ও লাইনম্যান সহ অনেক পদ খালি,খন্ডকালিন ও পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়ে চলে পৌরসভার বিভিন্ন কার্যক্রম। একজন্য চারজনের পক্ষে ইচ্ছে থাকা স্বত্বে পৌরবাসীকে সন্তোষজনক সেবা দিতে পারছেনা পৌরসভা।