রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৪২ অপরাহ্ন

কতটুকু চোখের জলে একফোঁটা রক্ত হয়,কতটুকু কষ্ট পেলে মানুষ বোবা হয়ে রয় তার উত্তর জানে শুধু মেঘনার তীরের জনগণ

প্রতিনিধির নাম / ১৬৩ বার
আপডেট : সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫
Oplus_131072

12

কতটুকু চোখের জলে একফোঁটা রক্ত হয়,কতটুকু কষ্ট পেলে মানুষ বোবা হয়ে রয় তার উত্তর জানে শুধু মেঘনার তীরের জনগণ

মোঃখলিলুর রহমান খলিলঃ
নদীর এপার ভাঙ্গে ঐপার গড়ে,
এইতো নদীর খেলা।
সকাল বেলার ধনীরে তুই
ফকির সন্ধ্যা বেলা।
এই কথাটি হইত সত্য তবে এই কথাটি সত্যি করা হই অনেক ক্ষেত্রে মনুষ্য সৃষ্টি দূর্যোগ থেকে। মানুষ লোভের বসে মাটি খায়, নদী খাই, খাই খাই এর কারণে আজ একটি গ্রামও খেয়ে ফেলেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী গ্রাম মানিকনগর, নাসিরাবাদ ও শ্রীঘরের নদী ভাংগনের বিষয়ে একাদশ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে রিভার এরিশন শিরোনামে একটি ভয়াবহ তথ্য বহুল প্রতিবেদন বা প্যাসেজ রয়েছে। এই গ্রামগুলোর মধ্যে মানিক নগর মেঘনার বুকে ইতিমধ্যে বিলিন হয়ে গিয়েছে। মানিক নগর বলে এখন কোন গ্রাম নেই।বড়িকান্দি একটি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে নাম মানিকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,গ্রামের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ায় স্কুলটি বড়িকান্দি স্থানান্তর করা হয়েছে। মেঘনার মাঝখানে নদী ভাংগনের কারণে একটি চর উঠেছে আর সেটিই নাম দেওয়া হয়েছে চর মানিক নগর। ২৫ মে সারাদিন এবিষয় প্রতিবেদন তৈরি করতে ছুটে চলা মেঘনার তীর হয়ে তিনটি গ্রামে।গ্রাম থেকে ঘুরে এসে তথ্য পাওয়া যায়।

মূলত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীঘর উত্তরপাড়া ও কান্দিপাড়া মেঘনাপাড়ের মহল্লা বাসী অবৈধভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা বন্ধের জোর দাবি তুলেছেন, যেখানে বাংলাদেশ সরকার নদী ভাঙ্গন ঠেকাতে ও নদী পাড়ের প্রত্যেকটি গ্রাম এবং বসতবাড়ি সহ ফসলি জমি রক্ষার্থে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছেন,সেখানে একদল প্রভাবশালী ভূমিদস্যু মেঘনাপাড়ের ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা, এদিকে মাটি কাটার কারণে আশপাশের জমিন সহ বাড়িঘর হয়ে পড়েছে হুমকির মুখে, বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হিসেবে প্রত্যেক বছর নদী ভাঙ্গনে শত শত মানুষের ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এবং যাদের বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে তারা সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পথের ফকির হয়ে যায়, শ্যামগ্রাম ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়া হলে,২৬মে সোমবার সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় শ্রীঘর গ্রামের উত্তর পাড়া ও কান্দিপাড়া মেঘনা নদীর পাড় থেকে বড় বড় স্টিলের ট্রলার দিয়ে একদল শ্রমিক মেঘনা পাড়ের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ট্রলার বুঝাই করছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন, এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায় এই মাটিগুলো শ্রীঘর গ্রামের কান্দিপাড়া প্রভাবশালী কাসেম মিয়া পিতা মৃত অলেক মিয়া ও শ্রীঘর দক্ষিণ পাড়ার আলমগীর হোসেন পিতা রেনু মিয়া, আরো জানা যায় আলমগীর হোসেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের আপন ভাই, এই দুই প্রভাবশালী মেঘনা পাড়ের ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা, এদের দুজনের কাছে এলাকাবাসী বারবার অনুরোধ করেন যেন মাটিকাটা বন্ধ করে, কিন্তু দুই প্রভাবশালী টাকার কাছে অন্ধ হয়ে এলাকাবাসীর কোন অনুরোধ রক্ষা করেননি, মেঘনা পাড়ের ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রভাবশালী কাসেম মিয়া ও আলমগীর মিয়া দৌড়ে আত্মগোপনে চলে যায়, অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাদের দুজনের কাউকে ক্যামেরার সামনে আনা যায়নি। মেঘনাপাড়ের বসবাসকারী নারী পুরুষ উভয়ই সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে ক্যামেরার সামনে এসে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিনয়ের সাথে তাদের ঘরবাড়ি মেঘনা ভাঙ্গন থেকে রক্ষা করতে প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছেন, তারা আরো বলেন এভাবে যদি মেঘনা পাড়ের
ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে প্রতিনিয়ত মাটি কেটে নেওয়া হয় তাহলে অতি দ্রুতই আমাদের অন্যান্য জমি সহ বাড়ি ঘর মেঘনা নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুম আহমদ বলেন বিষয়টি আমি অবগত নয়।
মেঘনা নদীতে বালু মহলের জন্য অনুমতি দেওয়ার কারণে ভাঙন দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নদী ভাংগনের কারণে কত লোক হারিয়েছে বসতবাড়ী,ফসলি জমি,গাছের বাগান তার কোন ইয়ত্তা নেই। সরকার বাঁধ নির্মাণের পাশাপাশি বালু মহলের বিষয়ে সতর্ক না হলে নবীনগরে মানচিত্র থেকে এই দুটি গ্রাম হয়তো বিলীন হয়ে যাবে।।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরো সংবাদ