নবীনগরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, নিহত ১, আহত ২০,পুরুষ শূন্য বাড়াইলগ্রাম।
মোঃখলিলুর রহমান খলিলঃব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড্ডা ও বাড়াইল গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে দীর্ঘ একমাস যাবৎ বিভিন্ন ক্ষুদ্র বিষয় নিয়ে মাঝে মাঝে ঝগড়ার ঘটনা ঘটে আসছে।আজ এক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চূড়ান্তভাবে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আজিজ মিয়া (৬০) নামে বাড্ডা গ্রামের একজন নিহত হয়েছেন এবং উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল সলিমগঞ্জ বাজারে ইসহাক মিয়ার দোকানে পেপসি কেনা নিয়ে বাড্ডা গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে দোকানদারের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে বাড্ডা গ্রামের জজ মিয়ার ছেলেসহ তিনজন আহত হন।
এই ঘটনার পর বাড্ডা গ্রামের উত্তেজিত লোকজন বাড়াইল গ্রামে হামলা চালিয়ে একটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে।
এই ঘটনার পর থেকেই উভয় গ্রামের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এমনকি উভয় গ্রামের লোকজন পৃথকভাবে বৈঠক করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রশাসনের উদ্যোগে আগামীকাল বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল।
তবে, সেই বৈঠকের আগেই গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাড্ডা গ্রামের লোকজন শ্রীঘর বাজারে বাড়াইল গ্রামের কয়েকজনের ওপর হামলা করে। এই হামলায় তিনজন গুরুতর আহত হন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে উভয় গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষে বাড্ডা গ্রামের মুন্সি বাড়ির মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে আজিজ মিয়া ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
এছাড়াও উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “উভয় গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।” তিনি আরও জানান, পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে এবং এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।বাড়াইলগ্রামে পুরুষের তেমন কোন উপস্থিতি দেখা যায়নি।এককথায় বলতে বাড়াইল গ্রাম পুরুষ শূন্য, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাড়াইলের ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এর মধ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও রয়েছে।