চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঘন ঘন লোডসেটিং অতিষ্ঠ জনজীবন
মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুরু হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। যার ফলে এই তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। ভোর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত অবদি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের এ মহড়া চলছে। প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়ার মধ্যেই আছে বিদ্যুৎ।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় প্রায় প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর বিদ্যুৎ আসে এবং মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট পর আবার চলে যায়।
লহলামারী এলাকার বাসিন্দা মো. নূরুল ইসলাম জানান, সারাদিন কাজ করে রাতে ঘুমানোর সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে তীব্র গরমে ঘুম আসে না। যার ফলে পরদিন কাজে মনোযোগ দেওয়া কষ্টকর হয়ে যায়। এ ছাড়াও আমার বাসায় ছোট দুইটি বাচ্চা গরমে সারারাত ঘুমাতে পারে না। দ্রুত এ অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অটো রাইস মিল ও ফুড মিল মালিকরা জানান, বিদ্যুৎ ঠিকমতো না থাকায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের অর্ডার ডেলিভারি দিতে পারছে না। এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা খারাপ, তার ওপর বিদ্যুৎ বিভ্রাট মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে কাজ করছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আমাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
ব্যবসায়ীরা আরো জানান, ঘন ঘন বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবে খরচ বাড়ছে এবং বিদ্যুৎ এর সমস্যা সমাধান করতে পারলে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা তৈরি হবে। মিল জানিয়েছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে কাজ বন্ধ থাকলেও শ্রমিকদের বেতন দিতে হচ্ছে, যা তাদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়িয়ে তুলছে। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
নাচোল উপজেলার কৃষকরা বলেন, এখন আমাদের আমন ধানে ছেঁচ দেওয়ার সময়, লোডশেডিংয়ের কারণে ধানে ছেঁচ দিতে পারছিনা, ছেঁচ দিতে না পারলে ধানের ফলন কমে যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি- এর জেনারেল ম্যানেজার ছানোয়ার হোসেন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক : ৩ লাখ ৪৬ হাজার
বিদ্যুতের চাহিদা দিনে ৬০-৭০ মেগাওয়াট, রাতে চাহিদা বাড়ে আরও ২০ মেগাওয়াট
এর বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে গড়ে ৪১ মেগাওয়াট
তিনি আরও বলেন, সারা দেশে কয়েকটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ সারা দেশেই লোডশেডিং বেড়েছে। আমরা যে পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি, তা অনুযায়ী প্রতি দেড় ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং করতে বাধ্য হচ্ছি। এ সমস্যা সমাধানে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।