মহিষের গাড়িতে বউ নিয়ে আসলেন শুভ।
তেঁতুলিয়া,পঞ্চগড় প্রতিনিধি।
হরহামেশায় শোনা যায় হেলিকপ্টার, মোটরযান কিংবা ঘোড়ায় চড়ে রাজকীয় বিয়ের কথা। এবার সে সব বিয়ের আলোচনা উপেক্ষা করে এক ভিন্ন বিয়ের আয়োজন দেখা গেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে।
শুক্রবার (৭ জুন) বিকেলে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মহিষের গাড়িবহরে এক ব্যতিক্রমী বিয়ের আয়োজন হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায়। মহিষের গাড়িতে চড়ে কনের বাড়িতে গেছেন বর। সে গাড়িতে করেই শ্বশুড় বাড়িতে এসেছেন কনে,
তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের সাহেবজোত গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মাসুবুল হক শুভর সঙ্গে বিয়ে হয় একই গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে ইসমিতা শারমিনের।
শুভর বাবার ইচ্ছে ছিল তার বিয়েতে মহিষের গাড়ি দিয়ে বিয়ের আয়োজন করার। বাবার ইচ্ছে পূরণের পাশাপাশি পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আয়োজন হয় এমন বিয়ে, এমন বিয়ে নিয়ে বরের পরিবার জানায়, বিগত দিনে রাজকীয় বিয়ে হিসেবে পূর্বপুরুষেরা এই গাড়িতে চড়ে বিয়ে করলেও কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেছে। বিলুপ্ত হওয়া সেই ঐতিহ্যকে আবারো তুলে ধরে মহিষের গাড়িতে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে যাওয়া হয়েছে। আধুনিকতার পরিবর্তে মহিষের গাড়িবহরে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ হয় বলেও জানান তারা।
এ নিয়ে কথা হয় বর মাসুবুল হক শুভর সঙ্গে। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে এমন আয়োজন। আমার বাবা-মার কাছে শুনেছি আমাদের পূর্বপুরুষরা এক সময় বিয়ের সময় গরু-মহিষের গাড়িতে বিয়ে করতে যেতেন। সে সময় গরু-মহিষের গাড়ির বিয়েকে রাজকীয় বিয়ে বলা হোত। কখনো এমন বিয়ে দেখিনি। আমার বাবা’র ইচ্ছে ছিল আমাকে মহিষের গাড়িতে চড়িয়ে বিয়ে করাবে। বাবার ইচ্ছে পূর্বপুরুষদের পুরাতন ঐতিহ্য ধরে রাখতে এমন আয়োজন। এ প্রজন্মের ছেলে হয়ে পূর্বপুরুষদের যুগে মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়ে করতে পারবো তা কল্পনাও ছিল না কখনো
কনের দুলাভাই আতিকুল ইসলাম আতিক বলেন, ‘আজ থেকে ত্রিশ বছর আগে এই মহিষের গাড়িতে চড়ে বিয়েতে গিয়েছিলাম। কনে আমার শ্যালিকা। বরপক্ষ মহিষের গাড়ি নিয়ে কনের বাড়িতে বিয়ে করতে আসায় বিষয়টা পুরাতন ঐতিহ্য ধারণ করায় বেশ ভালো লেগেছে। বাঙালির ঐতিহ্য এটি।’
এদিকে বরের বাবা নজরুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘আসলে আমি পেশায় বাস চালক। আমার পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য ধারণ করতেই ছেলের বিয়েতে আধুনিক গাড়ির পরিবর্তে মহিষের গাড়ির ব্যবস্থা করেছি। সবাই অনেক সাপোর্ট করেছে।’