ছাত্রীর সাথে শিক্ষকের অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ
খলিলুর রহমান খলিল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউনিয়নের কালঘড়া গ্রামের কালঘড়া হাফেজউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক,উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য, নবীনগর মডেল প্রেস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সুমন আহম্মেদ এর বিরুদ্ধে একই প্রতিষ্ঠানের সাবেক শিক্ষার্থী এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই কলেজ ছাত্রীর বাড়ি উপজেলার রসুল্লাবাদ ইউনিয়নের লহরী গ্রামে। সে নরসিংন্দী মডেল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী,নরসিংদী হোস্টেলে থেকে লেখা পড়া করছে। বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার (২৭/০৭) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ওই শিক্ষককে আইনের আওতায় আনার দাবী উঠে । সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওই ছাত্রীর মা বলেন,আমি এর বিচার চাই. মেয়ের এ অবস্থার জন্য শিক্ষককে দায়ী করে তিনি সমাজের কাছে বিচার চেয়েছেন।
স্থানীয় সুুত্রে জানা যায়, গত ৩ বৎসর আগে ওই ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন শিক্ষক সুমন। সেই থেকে আস্তে আস্তে ঘনিষ্ঠতা ও শারিরিক সম্পর্ক তৈরী হয়। ওই ছাত্রীর নানা ডাক্তার আলী হোসেন মেম্বার বলেন,সুমন নামের শিক্ষক ছেলেটা ভাল না ,আমার নাতনিকে শাসন করে ওর কাছ থেকে দুরে সরিয়ে নিয়ে নরসিংদী হোস্টেলে দিয়ে এসেছি।
ওই শিক্ষক সুমন আহম্মেদ তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি সম্পর্ন্ন অস্বীকার করে বলেন,আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র আমার সুনামকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ বিষয়টি ভাইরাল করেছে। ওই মেয়ের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই আমি তাকে চিনি না। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে ।
এ ব্যাপারে কালঘড়া হাফেজউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি,লিখিত অভিযোগ না পেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। আমাকে এক ব্যক্তি বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছে। আজ বিষয়টি যখন সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে দেখে আমি আমার (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক সাইফুদ্দিনকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেই এবং তাকে সাময়িক বরখান্ত করা হয়েছে। সুমন আহমেদ মূলত এইচ এস সি পাশ বলে দাবী করেন এলাকা বাসী, সুমন স্কুলে একটি নকল বিএ পাশ সার্টিফিকেট জমা দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, , সার্টিফিকেট এর বিষয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে কপি চাইলে তিনি বলেন আমিও এই অভিযোগ শুনেছি তবে আমি অসুস্থত থাকায় স্কুলে যেতে পারছি না পরবর্তীতে কপি দেওয়ার চেষ্টা করবো ।
এই বিষয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মনির হোসেন বলেন,ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও এ ধরেন অনেক অভিযোগ রয়েছে,তার বর্তমান স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে করে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে। প্রাইমারী স্কুলের সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রীর অভিযোগে মোবাইল কোটে দুই লাখ টাকা জরিমানাও দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোকারম হোসেন বলেন, সমাজিক যোগযোগ মাধ্যমে বিষয়টি দেখে প্রধান শিক্ষককে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক সালাউদ্দিন বাবুর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাদের সংগঠন কোন কালে অনৈতিক কাজে সমর্থন করে না যদি সুমন মাষ্টারের বিষয়ে তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
নবীনগর মডেল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন সুমন সম্পর্কে আমার নিকট কোন তথ্য নেই তথ্য পেলে অভিযোগ প্রমানিত হলে নবীনগর মডেল প্রেস ক্লাব থেকে তার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অত্র বিদ্যালয়ের বিদুৎ সাহী সদস্য ও নবীনগর মডেল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু কাউছার বলেন সুমন মাষ্টারের বিষয়ে স্কুল কমিটির মাধ্যমে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তিন দিনের ভেতর তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তদন্ত রিপোর্ট দেখে আমরা প্রদক্ষেপ নিব।