মোঃ খলিলুর রহমান খলিল জেলা প্রতিনিধি
নবীনগর উপজেলায় মধ্যরাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার আলম শিবুর বাড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। যদিও ঘটনার পরপরই আগুন নিভিয়ে ফেলেন আশপাশের বাসিন্দারা। ফলে তিন তলা ভবনটিতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাত ১টার দিকে উপজেলার পশ্চিমপাড়া আলমনগর সড়কের তিন তলা একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে নবীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গেছে, বাড়িটিতে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থলের একটি বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে আগুন দেওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়েছে। এতে দেখা যায়, প্যান্ট-শার্ট পরা এক দুর্বৃত্ত তিন তলা বাড়িটির গেটের সামনে সতর্কভাবে ঘোরাফেরা করছে। লোকটির দুই হাতেই বস্তু দেখা গেলেও সেগুলো ঠিক কী তা স্পষ্ট নয়। এদিক-সেদিক তাকিয়ে একপর্যায়ে বাড়ির গেটে ঢুকে পড়ে সে। এর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাড়ির ভেতরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। এ সময় দৌড়ে গেট দিয়ে বের হয় লোকটি। তখন তার জুতায়ও আগুন ধরে যায়। পায়ের আগুন নিভিয়ে মোবাইলে আগুনের ছবি তুলতে তুলতে দৌড়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ওই দুর্বৃত্ত।
আজ সকালে ভবনের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা কাউছার আলম শিবু বলেন, ‘আমার তিন তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় আমি পরিবার নিয়ে থাকি। নিচতলা ও তৃতীয় তলায় ভাড়াটিয়ারা থাকেন। রাত ঠিক ১টার দিকে আগুন আগুন চিৎকার শুনে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। পরে দেখি গেটে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে দোতলার দিকে উঠছে। সবার চিৎকারে আশপাশের মানুষজন এসে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিভিয়ে ফেলে।’
আগুনে বাড়ির গেটসহ নিচতলায় থাকা ছয়টি বৈদ্যুতিক মিটারের দুটি পুড়ে যায় বলেও জানান তিনি।
শিবু অভিযোগ করেন, ‘কয়েক মাস ধরে এলাকারই এক সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে আমি বিভিন্ন সময় প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছি। এজন্য সেই সন্ত্রাসীর নির্দেশেই আমাকে হত্যাসহ আমার বাড়িটি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ যে তাকে আগুন দিতে পাঠিয়েছে, সেটি আগুন দেওয়ার পর ওই দুর্বৃত্তের মোবাইলে ছবি তোলার দৃশ্য দেখেই পরিষ্কার বোঝা গেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।’
তবে অভিযুক্তের নাম জানাতে চাননি। তিনি বলেন, পুলিশের কাছেই অভিযুক্তের নাম বলা হবে।
খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নবীনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল মান্নান মিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গেছে পেট্রল দিয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। তা দেখে মনে হলো ঘটনাটি পরিকল্পিত। হয়তো কারও নির্দেশে ওই যুবক ভবনে আগুন দিয়েছে। বাড়ির মালিককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।’
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নবীনগর পৌর মেয়র শিব শংকর দাসও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনাটিকে উদ্বেগজনক উল্লেখ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের কাছে দাবি জানান তিনি।